বিদেশি ঋণ প্রতিশ্রুতিতে ৯৮% হ্রাস; প্রথম দুই মাসে ধস

বিদেশি ঋণের প্রকল্পগুলোর পুনরায় পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্তের কারণে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস, অর্থাৎ জুলাই ও আগস্টে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ প্রতিশ্রুতিতে বিশাল পতন হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই ও আগস্টে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৮.২% কমেছে।
এ দুই মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রকল্প তহবিল ও বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রুতি হিসেবে মাত্র ২০.১৬ মিলিয়ন ডলার এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ১.১৪ বিলিয়ন ডলার।
দেশব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এক গণঅভ্যুত্থানে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সরকারের সময় করা ঋণচুক্তির প্রস্তাবগুলো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পুনরায় পর্যালোচনা করছে, যার কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঋণচুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে না।
তবে কর্মকর্তারা আশা করছেন, পর্যালোচনা শেষে প্রস্তাবিত ঋণের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং লক্ষ্য অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি আদায় হবে।
আন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ ও বাজেট সহায়তার প্রাথমিক আশ্বাস দিয়েছে।
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার প্রকল্প চিহ্নিত করতে এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বন্ধ করার জন্য বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত সমস্ত চলমান, প্রস্তাবিত ও আলোচনার অধীনে থাকা প্রকল্পের পর্যালোচনা শুরু করেছে।
ইআরডি ইতোমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে প্রকল্পের যৌক্তিকতা, সম্ভাব্যতা ও অগ্রগতির তথ্যসহ একটি অগ্রাধিকার তালিকা জমা দিতে বলেছে।
ইআরডি সূত্র জানাচ্ছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে বৈদেশিক ঋণের তালিকা জমা দেওয়া হচ্ছে। ইআরডি এসব তালিকা পর্যালোচনা করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাবে।
পরবর্তীতে পরিকল্পনা কমিশন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করবে এবং ইআরডি ঋণ প্রক্রিয়া শুরু করবে।
১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির এক সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, "পাইপলাইনে থাকা সব প্রকল্প যাচাই-বাছাই করা হবে।"
তিনি বলেন, "বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে দ্রুত যাচাই-বাছাই শেষ করার চেষ্টা চলছে, কারণ আমাদের বৈদেশিক অর্থায়নের প্রয়োজন রয়েছে।"
"পাইপলাইনে বিলিয়ন-বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, তবে সব বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্প ভালো প্রকল্প বলে বিবেচিত হবে না," যোগ করেন তিনি।
বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রকল্প তহবিল এবং বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে ৯.৮৮ বিলিয়ন ডলার সহায়তা পেয়েছিল। তার আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ ধরনের অনুদানের পরিমাণ ৮.৯২% কম ছিল।
 (5).png)